অনলাইন জব ২০২২

বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ইন্টারনেট ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ধীরে ধীরে ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের অনলাইন জব এর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এইভাবে আমরা অনেকেই অনলাইনের এই সকল জবে নিজেকে আত্মনিয়োগ করছি। বিশেষ করে কোভিড-১৯ এর পর থেকে সবাই অনলাইন জবের দিকে ঝুকছে।
অনলাইন জব




বর্তমানে অনেকেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন জব করছে এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে নিজেদের আর্থিক অবস্থার স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসছে। যারা লেখা পড়া শেষ করা সত্বেও কাঙ্খিত চাকরি পাচ্ছে না তারা সেই পরিস্থিতিতে অনলাইন জবে নিজেদেরকে মেলে ধরতে পারছেন। সঠিক দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে অনেকে অনলাইন জব করার মাধ্যমে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করছে।

এগুলো পড়তে পারেন—
আজকে আমি এই পোস্টের মাধ্যমে অনলাইন জব কি, অনলাইন জব করতে কি কি প্রয়োজন এবং কিভাবে অনলাইন জব করে সেই সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। অনলাইন জব সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গভাবে জানার জন্য অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে চলুন প্রথমে জেনে নেওয়া যাক অনলাইন জব কি?

অনলাইন জব কি?

ইন্টারনেট ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের জব করাকেই অনলাইন জব বলা হয়। সহজ ভাষায় এভাবে বলা যায় যে, ইন্টারনেট প্রযুক্তির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ডিভাইস, মোবাইল, ইন্টারনেট এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির একক অধীনে কাজ করাকেই অনলাইন জব বলে। অনলাইন জব গুলো বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন—
  • চুক্তিভিত্তিক অনলাইন জব
  • প্রজেক্ট ভিত্তিক অনলাইন জব 
  • মাস ভিত্তিক অনলাইন জব 
অনেকের সুবিধামত এই ধরনের জব গুলো অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকে। অনলাইনের মাধ্যমে ছোট-বড় যে কোনো কাজই করুন না কেন যেসব কাজের মাধ্যমে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করা যাই সেগুলোকেই অনলাইন জব বলে। ফ্রিল্যান্সিং পেশাকেও অনলাইন জব এর মধ্যে ধরা হয়ে থাকে। 



বর্তমান সময়ে অনেকে অনলাইন জব করার মাধ্যমে প্রতিমাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। অনলাইনে কাজের জন্য সঠিক দক্ষতা থাকলে যে কেউ অনলাইনে জব করে একটি স্মার্ট এমাউন্ট আয় করতে পারবে। তাহলে চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক অনলাইন জব করতে কি কি প্রয়োজন?

অনলাইন জব করতে কি কি প্রয়োজন?

বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঘরে বসে অনলাইন জব করে টাকা ইনকাম করা আগের চেয়ে অনেক সহজতর হয়ে গিয়েছে। নির্দিষ্ট কোন কাজের উপরে সঠিক দক্ষতা থাকলে যে কেউ অনলাইনে জব করে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। অনলাইনে জব করার জন্য কিছু উপাদানের প্রয়োজন হয়ে থাকে। যেমন—
  1.  স্মার্ট ফোন
  2. ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ 
  3. ইন্টারনেট কানেকশন (বাধ্যতামূলক)
যারা অনলাইনে জব করতে চান তারা এই তিনটি জিনিস ব্যবহার করার মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে যে কোন ধরনের কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে অনেকে স্মার্টফোনের মাধ্যমে অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কাজ খুব সহজেই সম্পূর্ণ করছেন।

তবে যারা ফ্রিল্যান্সিং জব করছে তাদের স্মার্টফোনের পাশাপাশি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ থাকাটা দরকার। তার সাথে প্রয়োজন হবে ইন্টারনেট কানেকশনের। কেন না অনলাইনে অনেক কাজ রয়েছে যে কাজগুলো শুধুমাত্র স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে করা সম্ভব হয় না।

তবে অনলাইনে ছোটখাটো জব গুলো খুব সহজেই মোবাইলের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়। এমন অনেকে আছেন যারা শুধুমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহার করেই অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের জব করে মাসে লাখ টাকা ইনকাম করছেন। যার কারণে অনলাইনে জবটা এখন অনেকের কাছে আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। 

অনলাইন জব কিভাবে করবো?

অনলাইন থেকে আয় করার প্রশ্নটিই আসার আগে অনেকে এই প্রশ্নটা করে থাকেন যে অনলাইন জব কিভাবে করব? দেখুন বর্তমানে অনলাইনে অসংখ্য কাজ রয়েছে এবং যার যার কোয়ালিটি ও কাজের অভীজ্ঞতা অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের কাজ অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকেন।

তাই অনলাইন জব কিভাবে করব এটা বলার আগে আপনাদের আগে সিলেক্ট করতে হবে যে, আপনারা অনলাইনে কোন ধরনের কাজ করতে চান। ধরুন আপনি অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান। তাহলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের অনেক পার্ট আছে আপনাকে এর মধ্যে যে কোনো একটি সিলেক্ট করতে হবে। যেমন— গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি।

আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে অনলাইনে কাজ শুরু করতে চান তাহলে আগে আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা নিতে হবে। তারপর আপনাকে কোন প্রতিষ্ঠান থেকে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোর্সটি ভালোভাবে করে নিতে হবে। তারপরে আপনি যখন গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজটি সম্পূর্ণভাবে শিখে যাবেন তখন আপনি চাইলে ইন্টারন্যাশনাল অনেক মার্কেটপ্লেস রয়েছে সেই মার্কেটপ্লেসগুলোতে জবের জন্য এপ্লাই করতে পারেন।

আপনি যদি একজন ইউটিউবার হয়ে অনলাইন জব করতে চান তাহলে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে এবং ভিডিও এডিটিং খুব ভালোভাবে রপ্ত করে ফেলতে হবে। পরবর্তীতে যখন আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি বড় হয়ে যাবে তখন অনেক উপায় অবলম্বন করে এখান থেকে আয় করতে পারবেন।

তাই অনলাইন জব শুরু করার আগে কোন ধরনের কাজ আপনি অনলাইনে করতে চান সেটা আগে সিলেক্ট করে নিয়ে সেইভাবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। নির্দিষ্ট কোন কাজে আপনি যদি খুবই দক্ষতা সম্পন্ন হয়ে থাকেন তাহলে খুব সহজেই অনলাইন জব করার মাধ্যমে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।

ঘরে বসে পার্ট টাইম অনলাইন জব 

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা ঘরে বসে পার্টটাইম কিছু অনলাইন জব খুঁজে থাকেন। হ্যাঁ অনলাইনে এমন অসংখ্য জব রয়েছে যে জব গুলো আপনারা যেকোনো কাজের পাশাপাশি করতে পারবেন। এই কাজগুলো করার মাধ্যমে Part টাইমে আপনারা ভালো অর্থ উপার্জনও করতে পারবেন।নিচে ঘরে বসে পার্ট টাইম অনলাইন জব করার সেরা সেরা ১০ টি উপায় দেওয়া হল—

০১। কপি টাইপিং জব

এখানে কপি জব বলতে অন্যের ব্লগ বা ওয়েবসাইট থেকে আর্টিকেল কপি করাকে বুঝাচ্ছে না। সাধারণত এমন কিছু বই বা বড় বড় উপন্যাস থাকে যেগুলো পুরনো হয়ে যায়। তখন সেগুলো পুনরায় নতুন করে বাধাই করা প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে পুরনো বই পুস্তকের লেখাগুলো পুনরায় টাইপ করার প্রয়োজন হয়। 

এ ক্ষেত্রে আপনার যদি দ্রুত গতিতে টাইপ করার দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস থেকে সহজে কপি টাইপিং জব পেয়ে যাবেন। যদিও আপনার কাছে বিষয়টি খুব ছোট মনে হতে পারে তবুও আমি বলব আপনার যদি অন্য কোন দক্ষতা না থাকে তাহলে আপনি এ ধরনের কপি টাইপিং জব করে শুরুতে ভালো মানের টাকা ইনকাম করতে পারনে।

কিভাবে আপনি এ ধরনের কাজ খোঁজে পাবে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের ব্লগের ফ্রিল্যান্সিং সংক্রান্ত পোস্টটি পড়তে পারেন। কারন ঐ পোস্টে আমরা ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে অনলাইন জব পাওয়ার উপায় সহজ ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। কাজেই আপনার যদি টাইপিং দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি কপি টাইপিং জব করতে পারবেন।

০২। ডাটা এন্ট্রি জব

ডাটা এন্ট্রির কাজও প্রায় কপি টাইপিং কাজের মতন। এখানেও কাজ করার জন্য আপনার টাইপিং দক্ষতা থাকতে হবে। আপনার টাইপিং স্পিড যত বেশি থাকবে আপনি তত বেশী ডাটা এন্ট্রি করতে পারবেন এবং তত বেশী টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

আপনার যদি কম্পিউটার সম্পর্কে বেসিক নলেজ থাকে তাহলে আপনি খুব অনায়াসে ডাটা এন্ট্রি সফটয়্যার গুলোর কাজ আয়ত্ম করে নিতে পারবেন। সাধারণত ডাটা এন্ট্রির কাজ এক/দুই দিনের মধ্যে শিখে নেওয়া যায়। ডাটা এন্ট্রি জব পাওয়ার জন্য আপনার নিচের স্কিলগুলো থাকতে হবে—
  1. একটি কম্পিউটার
  2. দ্রুত গতিরর ইন্টারনেট
  3. দ্রুত টাইপিং করার দক্ষতা
  4. কাজ করার ও বুঝার মত মনযোগ 

০৩। ফেসবুক বিজ্ঞাপন স্পেশালিষ্ট

ফেসবুক এখন ব্যবসা বাণিজ্য থেকে শুরু করে প্রায় সকল ক্ষেত্রে আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে আছে। কাজেই এখানে কাজ করা বা ফেসবুকে যে কোন অনলাইন জব পাওয়া এখন খুবই সহজ। বিশেষ করে এখন ছোট খাটো প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিশাল বড় বড় কোম্পানি ফেসবুকের মাধ্যমে বিজ্ঞান দিয়ে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসের প্রচার করতে পছন্দ করে।

এ ক্ষেত্রে আপনি যদি একজন ফেসবুক বিজ্ঞাপন স্পেশালিষ্ট হতে পারেন তাহলে অনলাইন জব করে লাখ টাকা ইনকাম করা আপনার জন্য কোন ব্যাপার হবে না। আর ফেসবুক বিজ্ঞাপন স্পেশালিষ্ট হওয়ার জন্য আপনাকে বিশেষ কিছু করতে হবে না। কোন প্রতিষ্ঠান থেকে বা অনলাইন থেকে বিষয়টি মাত্র এক মাসের মধ্যে রপ্ত করে নিতে পারবেন।

সাধারণত প্রত্যেক কোম্পানি যখন ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয় তখন কোম্পানি একজন ফেসবুক বিজ্ঞাপন স্পেশালিষ্ট এর পরামর্শ নিয়ে বিজ্ঞাপন দেয়। কারণ অভীজ্ঞ লোক ছাড়া ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিলে বিজ্ঞাপন দেওয়া সত্বেও কোম্পানি লাভবান হতে পারে না। 

এ ধরনের জবের ক্ষেত্রে আপনার কাজ হবে ফেসবুক নিয়ে এনালাইসিস করা। আপনি বিষয়টি যত বুদ্ধি মত্তার সাথে করতে পারবেন কোম্পানির বিজ্ঞাপন ফেসবুকের মাধ্যমে তত বেশী কাঙ্খিত লোকের নিকট পৌছবে এবং কোম্পানির সেল তত বেশী হবে। সে জন্য এ ধরনের ফেসবুক বিজ্ঞাপন স্পেশালিষ্টদের চাহিদা প্রচুর পরিমানে রয়েছে। সুতরাং কাজটি করতে পারলে আপনি অনায়াসে মাসে প্রচুর পরিমানে আয় করতে পারবেন।

০৪। সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার

আপনি হয়ত জানেন না যে, সিলিব্রিটিদের যত ফেসবুক পেজ থাকে সেগুলো তারা নিজেরা মেনটেইন করে না। কারণ সিলিব্রিটিরা তাদের সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে পোস্ট বা টাইমলাইন মেনটেইন করার মত সময় পায় না। সে জন্য তাদের যত ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থাকে সেগুলো নিয়মিত আপডেট রাখার জন্য একজন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ দিয়ে থাকে। 

তাছাড়া বড় বড় কোম্পানিগুলোও তাদের সোশ্যাল মিডিয়া সাইট মেনটেইন করার জন্য একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ দিয়ে থাকে। এই কাজটি খুব সহজ এবং অল্প পরিশ্রম করে পার্টটাইটে অনলাইন জব করা যায়। কাজেই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেসবুক, ইনস্টগ্রাম, টুইটার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে দক্ষতা থাকলে আপনি এই কাজটি করতে পারবেন।

০৫। কনটেন্ট রাইটিং জব

কনটেন্ট রাইটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং শখের একটি কাজ। আপনার যদি কোন বিষয়ে লেখালেখির অভ্যাস থাকে তাহলে খুব সহজে কনটেন্ট রাইটিং জব করতে পারবেন। কারণ বর্তমানে অনলাইন মার্কেটে কনটেন্ট রাইটিং এর প্রচুর পরিমানে চাহিদা রয়েছে।

আপনার যদি লেখালেখির উপর দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে কাজ পাওয়ার জন্য অফার করতে পারেন। কাজের অফার করলে নিঃসন্দেহে আপনার সাথে অসংখ্য অসংখ্য লোকজন যোগাযোগ করবে। এ ক্ষেত্রে আপনি যদি ভালোমানের আর্টিকেল প্রোভাইড করতে পারেন তাহলে প্রতিটি পোস্টের মান অনুসারে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ইনকাম করতে পারবেন।

তাছাড়া অনলাইনে অনেক বাংলা ও ইংরেজি ব্লগ রয়েছে যারা মাসিক চুক্তিতে কনটেন্ট রাইটিং জব দিয়ে থাকে। আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে চুক্তিভিত্তিক কনটেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে পারেন।

আপনার যদি টেকনোলজি বিষয়ে লেখার মত ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা টেকনোলজি বিষয়ে আর্টিকেল নিয়ে থাকি, যার বিনিময়ে প্রতিটি পোস্টের জন্য ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত পে করে থাকি। কাজ করতে চাইলে এই লিংক থেকে আমাদেরকে ইমেইল করতে পারেন। 

০৬। ভয়েসওভার আর্টিস্ট

ভয়েসওভার মানে হচ্ছে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট টপিকের উপর লেখা দেওয়া হবে। আর আপনাকে সেটা মুখে উচ্চারণ করতে বা পাঠ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে আপনার ভয়েস (কন্ঠস্বর) ভালো হলে সহজে যে কেউ আপনাকে এর ধরনের কাজ দিয়ে দিবে। কারণ যারা সুন্দরভাবে কথা বলতে পারে এবং যাদের গলার স্বর ভালো তাদের দিয়ে ভয়েসওভার করানো হয়। 

সাধারণত এ ধরনের কাজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েদের দিয়ে করানো হয়। কাজেই আপনি যদি কুকিল কণ্ঠি এবং স্মার্ট ভাষি হন তাহলে আপনার জন্য ভয়েসওভার আর্টিস্ট হিসেবে জব পাওয়া কোন ব্যাপার হবে না। এ ধরনের অনলাইন জব করে বড় ধরনের এমাউন্ট ইনকাম করা যায়।

০৭। এসইও এক্সপার্ট

অনলাইনে পন্য প্রমোট করার জন্য বা ওয়েবসাইট প্রমোট করার জন্য এসইও ছাড়া সহজ কোন উপায় নেই। কারো অনলাইন ব্যবসাকে অল্পদিনে গ্রাহক পর্যন্ত পৌছাতে চাইলে অবশ্যই এসইও করাতে হয়। কাজেই বুঝতেই পারছেন যে, প্রত্যেক অনলাইন প্রতিষ্ঠানের অবশ্যই একজন এসইও এক্সপার্ট এর প্রয়োজন রয়েছে। 

আপনি যদি এসইও বিষয়ে ভালো দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে বিভিন্ন কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের একজন এসইও এক্সপার্ট হিসেবে জব করতে পারবেন। এ ধরনের কাজে প্রচুর ডিমান্ড থাকার কারনে একজন এসইও এক্সপার্ট অল্প সময় কাজ করে প্রচুর পরিমানে টাকা আয় করতে পারে।

তাছাড়া এসইও বিষয়ে আপনার দক্ষতা থাকলে নিজের একটি ব্লগ তৈরি করেও ঘরে বসে সহজে নিজে নিজে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কারণ যারা ভালো এসইও জানে তারা খুব সহজে ব্লগিং করে সফল হতে পারে। কাজেই আপনি যদি এসইও এক্সপার্ট নাও হয়ে থাকেন তাহলে ৫/৬ মাস চেষ্টা করলে কাজটি রপ্ত করে নিতে পারবেন।

০৮। পিটিসি ওয়েবসাইট জব

পিটিসি ওয়েবসাইট হচ্ছে এমন কিছু ওয়েবসাইট যে ওয়েবসাইটগুলোতে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু কাজ করার মাধ্যমে অর্থ দেওয়া হবে। অর্থাৎ এই সকল ওয়েবসাইটগুলোতে আপনারা ভিডিও দেখে, ক্যাপচা পূরণ করে, বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে আরো অনেক পদ্ধতি ব্যবহার করে আয় করতে পারবেন। 

আমার দেখা এমন অনেকে আছে যারা বিভিন্ন ধরনের কাজের পাশাপাশি এই সকল পিটিসি ওয়েবসাইটগুলোতে ১-২ ঘণ্টা সময় দিয়ে প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা মাসে ইনকাম করছে। বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় কিছু পিটিসি ওয়েবসাইটের নাম নিচে দেওয়া হল
  • Ysense
  • Neobox
  • Inbox dollar
  • Sclert clicks
  • Paid verts
এই ওয়েবসাইট গুলো খুবই বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট তারা দীর্ঘদিন ধরে তাদের গ্রাহকদের পেমেন্ট দিয়ে আসছে। তাই যদি পার্টটাইম এ অনলাইনে কাজ করে ইনকাম করতে চান তাহলে এই ওয়েবসাইটগুলোতে কাজ করতে পারেন।

০৯। ভিডিও এডিটরের জব

বর্তমানে ইউটিউব অনেক জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছে। ইউটিউব কে ব্যবহার করে এখন অনেকের লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। যারা ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করছেন তারা অবশ্যই ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে ইনকাম করে থাকেন।

আরেকটি ইউটিউব চ্যানেল চালানোর জন্য অবশ্যই ভিডিওর প্রয়োজন হয়ে থাকে। আর ভিডিও গুলো সঠিকভাবে কাস্টোমাইজ এবং বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু যোগ করা ভিডিও এডিটরের কাজ। তাই যদি ভিডিও এডিটিং এর কাজটি সঠিকভাবে শিখে নিতে পারেন তাহলে অবশ্যই এখান থেকে পার্ট টাইম ইনকাম করা সম্ভব।

বর্তমানে অনেক জায়গাতে ভিডিও এডিটিং এর কোর্স করানো হয় হয়ে থাকে। এই কোর্সগুলো করে যদি সঠিকভাবে ভিডিও এডিটিং টা শিখতে পারেন তাহলে যেকোনো কাজের পাশাপাশি এই কাজ করে ভালো অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। ফেসবুকে বা মার্কেটপ্লেস থেকে আপনারা সরাসরি কাজ পেতে পারেন। 

১০। এফিলিয়েট মার্কেটিং জব

বর্তমানে অনলাইন থেকে আয় করার যত সহজতর পদ্ধতি রয়েছে তাদের মধ্যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করাটা অনেক সহজ একটি উপায়। আপনার নিজের কোন টাকার প্রয়োজন হবে না। আপনার যদি একটি ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল অথবা ফেসবুক গ্রুপ থেকে থাকে তাহলে খুব সহজেই এগুলো ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে সেখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করে দেওয়া। সেই কোম্পানির বিক্রিকৃত প্রোডাক্টের লাভ থেকে কিছু অংশ আপনাকে কমিশন দিবে। এভাবে যত বেশি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারবেন আর পরিমাণটা ততটাই বেশি বাড়বে। বর্তমানে অনেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে অনলাইন থেকে ভালো পরিমাণে  অর্থ উপার্জন করছে।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য জনপ্রিয় কিছু ওয়েব সাইট রয়েছে যে ওয়েবসাইটগুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনারা অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।বর্তমান সময়ের এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য জনপ্রিয় কিছু ওয়েব সাইট এর নাম নিচে উল্লেখ করা হলো:-
  • Amazon.com
  • Flipkart.com
  • Alibaba.com
  • Click Bank
আপনারা চাইলে এই সকল সাইট গুলোতে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আমাদের দেশে এমন অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার রয়েছে যারা শুধুমাত্র অনলাইনে এফিলিয়েট মার্কেটিং করার মাধ্যমে মাসে লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করে থাকেন। 

অনলাইন জব মোবাইল দিয়ে!!

মোবাইল ফোন ব্যবহার করেও অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের জব করা সম্ভব। ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ ছাড়া যে অনলাইনে জব করা যাবে না এমন কোন কথা নেই। হাতে থাকা স্মার্টফোনটিকে কাজে লাগিয়ে আপনারা অনলাইনে পার্টটাইম জব করার মাধ্যমে প্রতিমাসে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। 

মোবাইল এর মাধ্যমে আপনি ইউটিউব চ্যানেল চালাতে পারবেন, মোবাইল ব্যবহার করে আপনারা ব্লগিং করতে পারবেন, মোবাইল এর মাধ্যমে তা পূরণের বিভিন্ন ধরনের কাজ করা যাবে। তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারছেন যে অনলাইন জব মোবাইল দিয়েও বর্তমানে করা সম্ভব। 

যারা বলে থাকেন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ছাড়া অনলাইনে কোন ধরনের জব করা যাবে না তাদের এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। অনলাইনে কাজ করার সঠিক মানসিকতা এবং ধৈর্য যদি আপনার ভিতরে থাকে তাহলে মোবাইলের মাধ্যমেও অনলাইনে জব করা সম্ভব।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অনলাইন জব 

বাংলাদেশ হচ্ছে একটি উন্নয়নশীল দেশ। আমাদের দেশের অধিকাংশ তরুণ বেকারের সমস্যায় ভুগে থাকেন। অর্থাৎ চাকরিপ্রার্থী হয়ে তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত চাকরিটি পাননা। এতে করে অনেকে হতাশ হন। তাই বাংলাদেশের মতো দরিদ্র একটি দেশে এই সকল তরুণদের জন্য অনলাইন জব হতে পারে ক্যারিয়ার গঠনের দারুন একটি নিয়ামক।

অফলাইনে চাকরির চেয়ে অনলাইনে চাকরির মাধ্যমে বেশি অর্থ উপার্জন করা যায় যদি নিজের ভেতরে সঠিক দক্ষতা থাকে। আর সেটা বাংলাদেশে বসবাস করেও অনেকে করে দেখাচ্ছেন। বাংলাদেশ এখন অনেকে আউটসোর্সিং করে প্রতিমাসে লক্ষাধিক টাকার বেশি আয় করে থাকেন। অনেকে আউটসোর্সিং করার মাধ্যমে তাদের ক্যারিয়ার এবং লাইফস্টাইল সঠিকভাবে চালাতে পারছেন। 

পড়াশোনা শেষ করে যারা চাকরির জন্য ঘুরে চাকরি নামক এই সোনার হরিণ পান না তারা চাইলে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিজেদের ক্যারিয়ার গঠন করতে পারেন। তাছাড়া আপনি চাইলে এই খাতে উদ্যোক্তা হয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন। 

একজন উদ্যোক্তা হওয়ার মাধ্যমে আপনি যেমন নিজের কর্মসংস্থান করতে পারবেন তার সাথে সাথে বেশ কিছু লোকের কর্মসংস্থানও আপনার দ্বারা হবে। এতে করে দেশের উন্নতি হবে। তাই বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য অনলাইন জব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই প্লাটফর্মে তারা পার্টটাইম এবং ফুলটাইম কাজ করতে পারবে এবং এখান থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবে। 

অনলাইন জব করে কি ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব?

অনেকে এই প্রশ্নটা করে থাকেন যে অনলাইন জব করার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়ার যাবে কিনা? ধরুন আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার। ফাইবার, আপওয়ার্ক, Freelancer.Com এই সকল ওয়েবসাইটগুলোতে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের অসংখ্য কাজ রয়েছে।

আপনি যদি একজন প্রফেশনাল গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে এই সকল ওয়েবসাইটগুলোতে আপনি আপনার কাজের বিষয়ে বলতে পারেন। আপনার কাজের বিবরণ শুনে যদি কেউ আগ্রহী হয়ে থাকে এবং আপনাকে যদি কাজ দিয়ে থাকে তাহলে আপনি সেই কাজটা সম্পূর্ণ করার জন্য টাকা পাবেন। 

এইভাবে আপনি যত পরিচিতি বাড়াতে পারবেন আপনার কাজের পরিমাণ কিন্তু আরো বাড়বে। আর কাজ বাড়লে আপনার ইনকামও বেশি হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ এমন একটি কাজ  যেটার চাহিদা অনলাইনে সকল সময়ই থাকবে। অর্থাৎ এই কাজটি খুবই সম্ভাবনাময় একটি কাজ।

তাই সঠিকভাবে যদি আপনি এই কাজটি করে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে অবশ্যই এটির মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব। আমাদের দেশে বর্তমানে এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং এইসকল কাজগুলো করার মাধ্যমে প্রতিমাসের লক্ষ টাকার বেশি ইনকাম করে থাকেন। 

আমার দেখা এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছেন যারা শুধুমাত্র এই অনলাইন জব করেই এখন সফল। তাই অবশ্যই যারা অনলাইন জব করবেন বলে ভাবছেন তারা নিঃসন্দেহে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন কেননা অনলাইন জব করেও ক্যারিয়ার গঠন করা সম্ভব। 

শেষ কথা

অনলাইন জব এর মাধ্যমে এখন সারা বিশ্বের মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হচ্ছে। এখন আপনারা অসংখ্য অনলাইন জব পেয়ে যাবেন যে কাজগুলো করার মাধ্যমে এখান থেকে ভালো পরিমাণে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। আপনার ভেতরে যদি সুনির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে এখান থেকে ভালো কিছু করা যাবে। তাই নিজেকে অনলাইন জব এর জন্য উপযুক্ত করে তুলে আপনি এই প্ল্যাটফর্মকে টার্গেট করে এগিয়ে যেতে পারেন আশা করি এখান থেকে আপনি অবশ্যই সফল হবেন। 

আশাকারি আমি আপনাকে অনলাইন জব সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা দিতে পেরেছি। আমাদের পোস্টটি পড়ে যদি কোন বিষয় সম্পর্কে বুঝতে অসুবিধা হয়ে থাকে তাহলে আমাদেরকে সরাসরি কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন। আর অনলাইন জব সম্পর্কিত যদি কোন ধরনের প্রশ্ন থাকে তাও আমাদের করতে পারেন। ধন্যবাদ...
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url